আহারে, প্রগতিশীলের পো, আহারে আমাদের নাজুক মননশীলতা, আহারে শরীরহীনতা, আহারে আমাদের টলটলে ভাবাবেগ, আহারে, আহারে, আহারে আমদের পশমে মোড়া মস্তিষ্কগুলো, আহারে, আমাদের কোমল হৃদয়, আমাদের তুলতুলে মেরুদণ্ড, আমাদের ফিনফিনে চামড়া, আহারে! আহারে, আমাদের লেগেছে, ব্যাথা লেগেছে, খুব লেগেছে। আহারে, আমাদের রাষ্ট্রক্ষমতা, আমরা বেটি বাঁচিয়েছি, পুড়িয়ে মেরেছি বেটির মুসলমান প্রেমিককে। আহারে, আমাদের আগ্রাসী জেন্ডার চেতনা, আহারে, আমাদের সেন্সিটিভ মাড়ি, আমরা টুথপেস্ট কিনে থাকি অনেক সময় নিয়ে। আহারে! আহারে। আমাদের শ্রেণীচেতনা, আমরা রিক্সাওয়ালা দেখলেই ডেকেছি তুই, আমলাকে বলেছি স্যার। আহারে। আমরা চে কে বলেছি সেক্সি, রবীন্দ্রনাথকে বলেছি ঠাকুর, নিজের সন্তানকে বলেছি শুয়োরের বাচ্চা। আহারে, আমাদের রসবোধ, আমরা কিন্তু কৌতুক বুঝি, ননভেজগুলো স্পেশালি, মাইরি, কী ক্রিয়েটিভিটি, খিকখিক! অথচ, আমরা সবাই সুবোধ বালক অথবা বালিকা অথবা সরকার। আহারে! আমরা চিকনি চামেলি মেরেছি চাকুম চুকুম, প্রেমিকাকে আদর করে ডেকেছি বেবি ডল, আর রাগ করে বলেছি সোনাগাছী। আহারে আমাদের ফ্যাবিন্ডিয়া, আমাদের সংস্কৃতি। আমাদের সচেতনতা। রাষ্ট্র যা বলে দেয়, যেভাবে বলে দেয় আমরা তাই করি। মুখ্যমন্ত্রী এসে ভাইস চ্যান্সেলরের পদত্যাগ ঘোষনা করে দিলেই আবির কিনতে ছুটি, প্রশ্ন করি না, মাননীয়ার ক্ষমতা কিকরে হয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার? আমরা প্রশ্ন করি না, কোনও প্রশ্ন করি না। আমরা গান গাই। আহারে আমাদের পঁচিশে বৈশাখী মন, আমরা সুরেলা এবং শান্তিপ্রিয়। রাষ্ট্র বলে দিয়েছে প্রতিবাদের ধরণ কেমন হবে, আমরা তাই পুলিশ ক্যালাতে এলে পিওর কটনের শাড়ি পরে গান গাই, আর ময়লা পাঞ্জাবি পরে কাব্যি আওড়াই। ধর্ষন করে এসে ভাত খাই, ধর্ষিতাকে বলি, “দেখাও তো দেখি কোথায় মলেস্ট করেছে”! আহারে আমাদের শালীনতা আর ঐতিহ্য। আহারে। আহারে, আমাদের আনন্দবাজার।