শেষপর্যন্ত যা পড়ে ছিলো তার এক ভাগ প্রাণ আর বাকি তিন ভাগ লাশ।
কিন্তু প্রাণীদের মধ্যে অনেককেই দেখতে ছিল অবিকল তাদের লাশের মত, আর কিছু লাশের মুখের দিকে তাকালে মনে হতো এখনই স্লোগান দিয়ে উঠবে। অন্য কিছু লাশের নাড়ি ভুড়ি আর এঁটোকাঁটা বাকি ছিলো – তাদের চামড়া থেকে উত্কৃষ্ট চাবুক তৈরী হয়েছে। কিছু লাশ বড় দগ্ধ হয়েছে মরণে, তাদের চামড়াগুলো নষ্ট হয়েছে, কাজে লাগানো যায়নি। তবে কিছু মুন্ডু খুব ত্যাদড় গোছের , প্রাণ থাকতে এইগুলোই ভয় পায়নি তাই গলা থেকে কাটা হয়েছিলো, এখন ধড় না থাকতেও মগজ গুলোকে কব্জা করা যাচ্ছেনা। কিছু ধড় আবার দারুণ ডাগর – তাদের মুড়োগুলোকে নিয়ে মাথা ঘামায়নি প্রাণীকূল। এদেরমধ্যে কমরেড শ্রুতির লাশটা বিশেষ মন দিয়ে দেখেছি। একতাল মাংস থেকে রীতিমত ভাস্কর্য করে বের করে আনতে হবে একটা পরিণত নারী শরীর। কিন্তু সেসব আমরা দেশপ্রিয় পার্কে করব না হয়, শ্রুতিকে পুনরায় শরীর দিলে শ্রুতি রাইফেল ধরবে, আর আমাদের আখাম্বা পুতুলটি ধরবেন ত্রিশূল কিংবা পদ্ম। ত্রিশূল ন্যাশনাল তরবারি তাই প্রাণীকূলকে অভয় দেবে, আর পদ্ম তো সরকারি পুষ্প বিশেষ। শুধু ভাসানের সময় ত্রিনয়নাকে যত অসহায় লাগে, তেলেঙ্গানার এই চোখ খুবলে নেওয়া লাশ ছিলো ততোধিক অপরাজেয়। আর প্রাণীরা অনুভব করেছিলো, এই জন্যই মেয়েছেলেদের দেবী বানিয়ে রেখে দিতে হয়, কদাচ প্রাণসঞ্চার করতে নেই।
খালি কিছু লাশের ঠোঁট তখনও আধখোলা, তারা স্লোগান খুঁজছিলো; আর কিছু প্রাণকে দেখাচ্ছিলো অবিকল লাশের মতন। যেমন সিপিএম-কে দেখতে হয়েছিলো ভালো তৃণমুলের মত আর তৃণমুল শেষ অবধি খারাপ সিপিএম।
সাদা নয়, কালো নয়, শেষপর্যন্ত যা পড়ে ছিলো তার বেশিরভাগই ধূসর। কেবল একজন ত্রিশূলবিদ্ধ প্রাণ লাশ হতে হতে ঘোষণা করেছিলো, আমাদের সত্যি বলতে আছে শুধু গ্রিক ট্র্যাজেডিটুকু, আর জাগিয়ে তোলবার জন্য আছে গোটা দুনিয়া!